জমি-জমার হিসাব নিকাশ । পর্ব-০১

 ভূমি জরিপ ঃ



বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষের জমি বিষয়ে জ্ঞান কম।আসলে আমরা সচেতন হলে এমন টি হত না।

জমির বিষয়ে আমাদের মনে ভীতি ও অবহেলা কাজ করে  ফলে জমি-জমা বিষয়ে আমরা  ক্ষতির সম্মুখীন হই। আমাদের সমাজে অসাধু অশিক্ষিত ব্যাক্তি আছে তারা জমি বিষয়ে অভিজ্ঞ । তারা উচ্চশিক্ষিত ব্যাক্তিকেও জমি ক্রয়-বিক্রয়ের  সময়ে ঠকিয়ে পথে বসিয়ে দিতে পারে। একটু সাবধান হলেই এমনটি ঘটবে না।

যাইহোক আমরা জমির জরিপ সর্ম্পকে আলোচনা শুরু করি। বিভিন্ন  সময়ে বাংলাদেশে প্রধানত ৪ টা ভূমি  জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। 

১। সিএস জরিপ ( Cadastral Survey) 

২। আর. এস জরিপ ( Revisional Survey)

৩। এসএ জরিপ ( State Acquisition Survey)

৪। বিএস জরিপ ( Bangladesh Survey)


১। সিএস জরিপ :  ১৮৮৮ সালে কক্সবাজারের রামু থেকে ভুমি জরিপ শুরু হয় এবং ১৯৪০ সালে দিনাজপুর জেলায় সিএস জরিপের কাজ শেষ হয়।  উক্ত সময়ের জমির জরিপ কে সিএস জরিপ বলা হয়।


২। আর.এস জরিপ ঃ সিএস জরিপের ৫০ বছর পরে আর এস জরিপ শুরু হয়। নিখুঁতভাবে জরিপ সম্পন্ন করা হয়। আর এস জরিপের উপর মানুষের আজও আস্থা রয়েছে।  


৩। এস এ জরিপ ঃ এস এ জরিপকে পি এস খতিয়ানও ( Pakistan Survey Khatian) বলা হয়। এই জরিপে ত্রুটি থাকার কারণে আইন প্রনেতাগণ এর সাক্ষ্যগত মূল্যায়ন করেন নাই। 


৪। বি এস জরিপ ঃ বি এস জরিপ ১৯৭০ সাল থেকে শুরু হয় এবং ১৯৯০ সালে শেষ হয়। 



খতিয়ান ঃ 

খতিয়ান হল ভূমির মালিকানার রেকর্ড যা মালিকানার সাক্ষ্য বহন করে । খতিয়ান ও পর্চা একই জিনিস না, পার্থক্য আছে। ভূমির পরিমান, ভাগবাটোয়ারা, হিস্যা বন্টন কাজগুলি খতিয়ানের উপর ভিত্তি করেই হয়ে থাকে।

(ক) সি এস খতিয়ান ( Cadastral khatian) : Cadastral khatian কে সংক্ষেপে  C.S. বলে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিখুতভাবে সিএস খতিয়ান তৈরি করা হয়েছে। নক্সা তৈরি করে এবং সকল মালিকের নিকট দাগ নম্বর করে খতিয়ান তৈরি করা হয়। সিএস খতিয়ান কে অধিক মূল্যায়ণ করা হয়ে থাকে।খতিয়ান বা পর্চার প্রথম পৃষ্ঠার উপরে পরগনা শব্দটি লিখা থাকে। দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় জমির উত্তর সীমানার জমির মালিকের নাম লিখা থাকে। খতিয়ান বা পর্চা ছাপাখানায় মুদ্রত হয়।

(খ) আর এস খতিয়ান ( Revisional Khatian) ঃ আর এস (R S) খতিয়ান সবার মাঝে খুবই পরিচিত শব্দ । আর এস খতিয়ানের  উপর মানুষের আস্থা আছে। আর এস খতিয়ানের  প্রথম পৃষ্ঠার উপরে জেলা, মৌজা ও খতিয়ান নম্বর লিখা থাকে। দ্বিতীয় পৃষ্ঠার দাগ নাম্বার কলামের উত্তর সীমানায় দখলদার কলাম থাকে।অংশের কলাম ও রাজস্ব কলাম পাশাপাশি থাকে।

(গ) এস এ বা পি এস খতিয়ান (SA khatian) ্পাকিস্তান আমলে তৈরি হয় বলে PS খতিয়ান ও বলা হয়। 

এই খতিয়ান দানে বামে আড়াআড়ি থাকে। সর্বশেষ কলামে রাজস্ব কলাম থাকে । সি এস এবং এস এ দাগ নম্বর একই থাকে।

(ঘ) বি এস খতিয়ান (BS khatian) :  একে আর এস বা বিএস জরিপ নামেও উল্লেখ করা হয় । বিভ্রান্তি দূর করতে বি এস জরিপ বলা হয়। এই খতিয়ানের ১ নম্বর কলামে মালিক ও ঠিকানা লিখা থাকে। এই খতিয়ানে একটি মাত্র পৃষ্ঠা থাকে।




No comments

Featured post

ইট কি? ভাল ইটের বৈশিষ্ট্য ও ইটের ফিল্ড টেস্ট

 ইট হলো কৃত্রিম পাথর যা মাটি ও বিভিন্ন উপাদান মিশ্রণ করে আগুনে পুড়িয়ে তৈরী করা হয়। বিভিন্ন নির্মাণ কাজে ইট ব্যাবহার করা হয়। ইটের উপাদান সমূহ...

Powered by Blogger.